কোন রাষ্ট্রের প্রত্যেক স্বাধীন নাগরিকের রাজনীতি করা একটি মৌলিক অধিকার। কিন্তু মৌলিক অধিকার যে সব সময় প্রকাশ্যে ফলাতে হবে, এমন কোন কথা নেই। প্রত্যেক পিতা-মাতা সন্তান বড় হলে বিয়ে দিয়ে মেয়ে হলে শ্বশুর বাড়ী পাঠায় আর ছেলে হলে পুত্রবধু ঘরে আনে। আর প্রত্যেক সন্তান প্রাপ্ত বয়ষ্ক হলে বিয়ে করাটাও তার জন্য একটি মৌলিক অধিকার। কোন সন্তান যদি তার মৌলিক অধিকার ভেবে বিয়ে করে বউ নিয়ে এসে পিতা-মাতার সাথে একই বিছানায় বা একই ঘরে বসবাস করে বা করতে চায়, তাহলে সেটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য বা শোভনীয় হবে না। আর কোন সুস্থ্য সমাজে এমনটির প্রচলন আছে বলে আমার মনে হয় না।

শিক্ষকরা হচ্ছেন জাতির বিবেক। কাজেই শিক্ষকরা প্রকাশ্যে রাজনীতি করার অর্থই হচ্ছে বিবেকের মাঝে ঘুন ধরা। কাঠে ঘুন ধরলে তা বাইরে থেকে যতই চমৎকার দেখা যাক না কেন, এর ভিতরটা কিন্তু অন্তঃসার শূন্য। কোন রাষ্ট্রের শিক্ষকরা যদি প্রকাশ্যে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তাহলে সেই রাষ্ট্রের বিবেকটাও হয়ে পড়ে অন্তঃসার শূন্য। নির্বাচনের সময় শিক্ষকরা অবশ্যই ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। একথা ঠিক যে, ভোট প্রদানের সময় শিক্ষকদেরকেও কোন না কোন রাজনৈতিক দলের প্রতীকেই ভোট দিতে হয়, কিন্তু এর জন্য প্রকাশ্যে রাজনীতির করার কোন প্রয়োজন নেই। শিক্ষকরা যদি প্রকাশ্যে রাজনীতি না করেন, তাহলে প্রত্যেক বিবেকবান শিক্ষক ভোট প্রদানের সময় অবশ্যই তুলনামূলক বিচার করে ভোট প্রদান করতে পারবেন। কিন্তু কোন দলে প্রকাশ্যে যুক্ত থাকলে শিক্ষকদের আর এ সুযোগ থাকে না; অর্থাৎ তার বিবেক এখানে অকার্যকর।

শিক্ষকদের মনে রাখা দরকার, তাদের অবস্থান রাজনীতিবিদদের উপরে। বিশ্বজুড়ে যুগে যুগে রাজনীতিবিদ তৈরী হয়েছে এবং হচ্ছে শিক্ষকদের হাত ধরেই। শিক্ষকরা প্রকাশ্যে রাজনীতি করলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, রাজনীতিবিদরাই শিক্ষক তৈরী করেন। আর এমনটি হলে জাতির বিবেক বলে কিছু থাকে না। কোন দেশের রাজনীতিতে পচন ধরার কারণ যেমন শিক্ষকরা, তেমনি পচন ধরা রাজনীতিকে সুস্থ্য করার ক্ষমতাও শিক্ষকরাই রাখেন। যখন কোন দেশের শিক্ষক সমাজ রাজীতিবিদদের দ্বারা পদদলিত হবেন তখন বুঝতে হবে উক্ত দেশের রাজনীতিতে পচন ধরেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না শিক্ষকরা নিজেদের অবস্থান চিহ্নিত করতে সক্ষম হবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত রাজনীতিবিদরাই শিক্ষক তৈরী করবেন এবং প্রয়োজন মনে করলে পদদলিতও করবেন। যে দেশের শিক্ষকরা সর্বদাই কথা বলেন ন্যায়ের পক্ষে, কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে নয়, সেই দেশের রাজনীতিবিদরাই সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ আর শিক্ষকদের অবস্থান সবার উপরে।

By admin

One thought on “শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ রাজনীতি করা অশোভনীয়”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *