একটা প্রবাদ আছে যে, “সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে”। বাস্তবে এটা কতটুকু সত্য সেটা আলাদা কথা। কিন্তু আমার তো মনে হয় আজকের দিনে কোন রমনীই এটা মানতে চাইবেন না; বরং ভ্রু কুঁচে বলবেন, এটা অবাস্তব কেননা সংসারে নারী-পুরষ সকলের অধিকার সমান হওয়া উচিৎ। তাহলে সংসার সুখী করার জন্য কেবল নারীকে গুণী হতে হবে, পুরুষকে কেন নয়? এক্ষেত্রে আমি অবশ্য উক্ত নারীর সাথেই একমত পোষণ করবো। কিন্তু একটা বিষয় আমার মাথায় ঢুকছে না, সুখী সংসারে দু’টি সন্তানই যথেষ্ট, একটা হলে আরো ভালো। তাহলে যদি দু’টি সন্তান নেয়া হয় সেক্ষেত্রে একটি সন্তান মাতৃগর্ভে অন্যটি পিতৃগর্ভে জন্মদানের সুযোগ হয়তো আছে। কিন্তু যদি সন্তান একটিই নেয়া হয়, তাহলে কার গর্ভে জন্ম নেবে? মাতৃগর্ভে জন্ম নিলে তো সন্তান জন্মদানের কষ্টটা কেবল মাকেই ভোগ করতে হয়, অথচ সংসারে নারী-পুরুষ উভয়ের অধিকার সমান।
আসলে সমাজে সুখী মানুষ তো তারাই যারা সুখ-দুঃখ নিয়ে না ভেবে বরং স্ব স্ব দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন থাকে। বাচ্চা প্রসব, লালন-পালন এগুলো প্রাকৃতিক বিষয়। এখানে যদি অধিকারের সমতা খুঁজতে হয়, তাহলে সবথেকে উত্তম হচ্ছে সংসারে না জড়ানো। একটি সংসারে স্বামীর অবস্থান হওয়া উচিৎ সভাপতি আর স্ত্রীর অবস্থান সাধারণ সম্পাদক। আর তাহলেই পরিবারে সুখ হাতছানি দিয়ে ডাকবে। বস্তুতঃ সংসার কখনোই পুরুষ মানুষের হয় না। এটা সর্বদাই নারীর দখলে। আর যদি এটা মেনে নেয়া হয়, তাহলে তো মানতেই হবে সংসার সুখী কিংবা দুঃখী যেটাই হোক না কেন, এখানে নারীর ভূমিকাই মূখ্য। এদিক থেকে বিচার করলে, “সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে”একথাটাও সত্যি বলে বিবেচিত হয়।
পুরুষের কাজ সর্বদাই বাইরে। একটি সংসারের খুঁটিনাটি বিষয়ে কোন পুরুষ খোঁজ খবর রাখেন বলে আমার মনে হয় না। স্ত্রীরাই সর্বদা সংসার সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে মানিয়ে চলেন এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারীরা স্বাধীন ভাবে এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বাধীনভাবে সংসার পরিচালনার দায়িত্ব না দেন কিংবা যদি কোন স্ত্রী সংসারে তার দায়িত্ব পালন করাটাকে বোঝা মনে করেন তখনই সংসার হয়ে উঠে বিষময়। একজন আদর্শ স্ত্রী সর্বদাই একজন সাধারণ সম্পাদকের ন্যায় পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন অতঃপর অনুমোদনের জন্য স্বামীর কাছে উপস্থাপন করেন। আর একজন আদর্শ স্বামী বিনম্র চিত্ত্বে স্ত্রীর পরিকল্পনাগুলো সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন করে অনুমোদন করেন। আর এটাই হচ্ছে সুখী পরিবারের দৃষ্টান্ত।