ইশ! কী যে হতো? যদি এদেশে মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং গুলো চালু না থাকতো। নিশ্চিত মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি করানোর জন্য ছাত্র-ছাত্রীই খুঁজে পেত না। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা একজন শিক্ষার্থীর নির্ধারিত পয়েন্ট থাকলে মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেকোন বিজ্ঞান বিষয়ে পড়ার যোগ্যতা থাকার কথা। কিন্তু এদেশে তো উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কোন ছাত্র/ছাত্রী মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে না। এ জন্য তাকে অবশ্য অবশ্যই কোচিং করতে হবে।
শুধু কি তাই, মেডিকেলে ভর্তি হতে চাইলে মেডিকেল ভর্তি কোচিং, ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে চাইলে ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি কোচিং আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে তাকে স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নির্ধারিত ইউনিট ক, খ, গ …. এর যেকোন এক বা একাধিক ইউনিটের জন্য ভর্তি কোচিং করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি কোচিং করে মেডিকেলে ভর্তি কিংবা মেডিকেল ভর্তি কোচিং করে ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এটা কিন্তু সম্ভব নয়। কারণ উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে শিক্ষার্থীরা তো জ্ঞানার্জনের জন্য লেখাপড়া করে না বরং তারা যেকোন মূল্যে একটা এ+ সনদ কিভাবে পাওয়া যায় তার কলাকৌশল রপ্ত করে দু’বছর ধরে। কাজেই এই জ্ঞান নিয়ে কিভাবে তারা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে ভর্তি যুদ্ধে অংশ নেবে?
একমাত্র কোচিংই পারে মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীকে যোগ্য করে তৈরী করতে। তবে কোচিং কিন্তু অবশ্যই আলাদা আলাদা ভাবেই করতে হবে নচেৎ তাদের দেয়া তাবিজ কোন কাজেই আসবে না। তাই আমার মনে হয়, এখনই সময়, মাধ্যমিকে না হলেও অন্তত উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান, বাণিজ্য, মানবিক এসব বিভাগ পরিবর্তন করে বরং উচ্চ মাধ্যমিক মেডিকেল, উচ্চ মাধ্যমিক ইঞ্জিনিয়ারিং, উচ্চ মাধ্যমিক …… বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট ক, উচ্চ মাধ্যমিক ……. বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট খ ইত্যদি বিভাগ চালু করা উচিৎ। আর তাহলে শিক্ষার্থীদের কখনোই ভর্তি যুদ্ধে অংশ নিতে হবে না। কেননা, যে শিক্ষার্থী যে বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করবে সে সরাসরি সেই প্রতিষ্ঠান কিংবা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাবে। এর ফলে যাতে কোচিং সেন্টারগুলোর মাথায় বাজ না পড়ে সেজন্য সকল উচ্চ মাধ্যমিক কলেজগুলোর নাম পরিবর্তন করে উচ্চ মাধ্যমিক কোচিং সেন্টার হিসেবে ঘোষণা করে তাদের পাঠদানের যোগ্যতা ও মর্যাদা কোচিং সেন্টারের সমকক্ষ করা যেতে পারে।