‘সুদ’ একটি সামাজিক ব্যধি। পবিত্র কোরাণে ‘সুদ’ এর বিষয়ে কঠোর হুশিয়ারী থাকা স্বত্ত্বেও সমাজে ‘সুদ’ এর বিষবৃক্ষ এতটাই বিস্তৃতি লাভ করেছে যে ‘সুদ’ এর গ্যারাকলে পড়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য ব্যক্তি/পরিবার হচ্ছে নিঃস্ব, ভিটেছাড়া এমনকি ‘সুদ’ এর টাকা পরিশোধ করতে না পেরে কেউ কেউ হচ্ছে খুনের শিকার। ‘সুদ’ এর কারবার হচ্ছে বড়শিতে টোপ লাগিয়ে মাছ ধরার মত। কোন ব্যক্তি যদি ঐ বড়শির টোপ গেলার মত কোনভাবে একবার ‘সুদ’ এর গ্যারাকলে আটকে যান তাহলে তা থেকে বেড় হওয়া তার জন্য দুঃসাধ্য ব্যাপার। আর এটা কতটা দুঃসাধ্য তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া আর কারুরই পক্ষে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। কিন্তু তবুও সমাজে ‘সুদ’ এর প্রকোপ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ‘সুদ’ নিষিদ্ধ হওয়ার প্রধান কারণই হচ্ছে এটা থেকে বের হওয়ার অক্ষমতা। কিন্তু আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় আর্থিক লেন-দেন একটি অপরিহার্য বিষয়। কাজেই ভাল-মন্দ বিচার না করে কথায় কথায় ‘সুদ’ শব্দটি ব্যবহার করা একটি ধর্মীয় গোড়ামী। একটি সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য প্রয়োজন একটি সুন্দর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা স্থান-কাল-পাত্রের সাথে সর্বদাই পরিবর্তনশীল। নিচে অর্থনৈতিক লেন-দেনের কয়েকটি দৃশ্যকল্প উপস্থাপন করা হলো।

 দৃশ্যকল্প-১:

অস্বচ্ছল রহিম মিয়া ভাবছে, একটা ফ্রিজিয়ান দুধেল গাভী কিনতে পারলে দ্রুত তার সংসারে স্বচ্ছলতা আসত। কিন্তু কে দেবে তাকে এক লক্ষ টাকা গাভী কেনার জন্য? ঘটনাচক্রে করিম মিয়ার সাথে পরিচয় ও সখ্য গড়ে ওঠে। রহিম মিয়ার কথা শুনে সে বলে, মেয়ের বিয়ের জন্য এক লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেছি। তুমি যদি এক বছরের মধ্যে টাকাটা ফেরৎ দিতে পারো তাহলে আমি তোমাকে গাভী কেনার জন্য এক লক্ষ টাকা দিতে পারি এজন্য আমাকে কোন প্রকার লাভ/মুনাফা দিতে হবে না। রহিম মিয়া খুশিতে গদগদ হয়ে বলে, দুধেল গাভী কিনে আমি দুধ বিক্রি করে এক বছরের মধ্যেই টাকাটা ফেরৎ দিতে পারবো। অবশেষে রহিম মিয়া করিম মিয়ার নিকট থেকে এক লক্ষ টাকা ধার নিয়ে একটি ফ্রিজিয়ান দুধেল গাভী কিনল। প্রতিদিন দুধ বিক্রি করে বেশ ভালই আয় হচ্ছিল কিন্তু বিধি বাম। ২/৩ মাস যেতে না যেতেই হঠাৎই গাভীটি মারা যায়।

 জিজ্ঞাসাঃ

  1. অস্বচ্ছল রহিম মিয়া স্বচ্ছলতার আশায় দুধেল গাভী কিনেছিল। কিন্তু টাকা ধার করে কেনা গাভীটি হঠাৎ মারা যাওয়ায় তার মাথায় বাজ পড়ল। এখন কিভাবে সে করিমের নিকট থেকে ধারে নেয়া এক লক্ষ টাকা পরিশোধ করবে?
  2. করিম মিয়া ততটা স্বচ্ছল নয় যে, রহিম মিয়ার দুঃখ বিবেচনা করে সে টাকাটা মাফ করে দেবে। আর স্বচ্ছল হলেও তিনি কেনই বা ধার দেয়া টাকা মাফ করে দেবেন?
  3. করিম মিয়া তার মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো টাকা ধার দিয়েছে, এখন টাকা ফেরৎ না পেলে তিনি কীভাবে তার মেয়ের বিয়ে পার করবেন?
  4. এই পরিস্থিতি রহিম মিয়াকে করেছে নিঃস্ব আর করিম মিয়ার সুখী জীবনে এনেছে একটা চিন্তার ঝড়, এটা কি কোন স্বাভাবিক বিষয়?

 দৃশ্যকল্প—২:

অস্বচ্ছল রহিম মিয়া তার বন্ধু করিম মিয়ার কাছ থেকে এক লক্ষ ধার নিয়ে একটা ফ্রিজিয়ান দুধেল গাভী কিনতে চায়। দুই বন্ধুর বড়ীর দূরত্ব প্রায় ১০ কি. মি.। করিম বলে, তোমাকে আমি গাভী কেনার জন্য এক লক্ষ টাকা ধার দিতে পারি এক শর্তে, টাকার জন্য আমাকে কোন লাভ/মুনাফা দিতে হবে না। তবে তুমি যেহেতু আমার টাকায় দুধেল গাভী কিনবে তাই গাভী থেকে প্রাপ্য দুধের অর্ধেকটা প্রতিদিন আমার বাড়ীতে পৌঁছে দিতে হবে। আর গাভী দুধ দেয়া বন্ধ করার পর অনুর্দ্ধ এক মাসের মধ্যে আমার দেয়া টাকাটা ফেরৎ দিতে হবে।

 জিজ্ঞাসাঃ

  1. প্রতিদিন ১০ কি. মি. পথ যাতায়াত করে দুধ পৌঁছে দেয়ার শর্তে করিমের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গাভী কেনা সত্যিই কি রহিমের জন্য সহজ/লাভজনক?
  2. গাভী দুধ দেয়া বন্ধ করলে করিমের টাকা ফেরৎ দেয়ার জন্য পুনরায় গাভীটি বিক্রি করতে হবে তাহলে করিমের কাছ থেকে লাভবিহীন টাকা নিয়ে গাভী ক্রয় দ্বারা আদৌ কি রহিমের স্বচ্ছলতা আসা সম্ভব?

 দৃশ্যকল্প-৩:

অস্বচ্ছল রহিম মিয়া গ্রামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে এক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে একটি ফ্রিজিয়ান দুধেল গাভী কিনতে চায়। শর্ত গাভীটি প্রতিদিন যে পরিমাণ দুধ দেবে তা বিক্রি করে গাভী লালন-পালনের খরচ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট্য মুনাফা সমান দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। গাভীটি দুধ দেয়া বন্ধ করলে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান গাভীটি নিয়ে নেবেন কারণ ওটা প্রতিষ্ঠানের টাকায় কেনা। অবশ্য গাভীটি কোন সময় কোন কারণে মারা গেলে রহিম মিয়াকে গাভী কেনার জন্য গৃহীত টাকার অর্ধেক ফেরৎ প্রদান করতে হবে। রহিম মিয়া দীর্ঘদিন ধরেই গাভী পালন করে স্বচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্ত এমন শর্তে টাকা নিয়ে গাভী কিনলে কোনদিনই তিনি গাভীর মালিক হতে পারবেন না। সুতরাং স্বচ্ছলতা আসার কোন প্রশ্নই আসে না। তাই রহিম মিয়া নানা ভাবনায় দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেলেন।

 জিজ্ঞাসাঃ

  1. ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে পরিচালিত সুদিবিহীন কার্যক্রম সত্যিই কি রহিম মিয়ার জন্য একটা ভাল সুযোগ?
  2. যদি গাভীটি মারা যায় তাহলে তাকে গাভী কেনার জন্য গৃহীত টাকার অর্ধেক ফেরৎ দিতে হবে, কোথা থেকে দেবেন সে টাকা?
  3. গাভীটি বেঁচে থেকে দুধ দেয়া বন্ধ করার পর গাভীটি ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানের হবে কারণ ওটা কেনার জন্য পুরো টাকা দিয়েছে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান, রহিম মিয়া কোন টাকা বহন করেনি। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে রহিমের স্বচ্ছলতা আসবে না, কোনদিন একটা গাভীরও মালিক হতে পারবেন না। উপরন্ত গাভীটি মারা গেলে গাভীর অর্ধেক টাকা ফেরৎ দিতে গিয়ে তাকে আরও নিঃস্ব হতে হবে। তাহলে এই পদ্ধতি কীভাবে রহিম মিয়ার জন্য একটা সুযোগ হতে পারে?

 দৃশ্যকল্প-৪:

অস্বচ্ছল রহিম মিয়া ঋণ নিয়ে একটি ফ্রিজিয়ান দুধেল গাভী কেনার জন্য বাড়ী থেকে ২০ কি. মি. দূরে অবস্থিত একটি অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানে যায়। কারণ, সে শুনেছে ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিলে ঋণের জন্য কোন অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়না, যে টাকা ঋণ দেয়া হয় সেই টাকাই কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। ঋণ অফিসে গিয়ে সে জানতে পারে, এক লক্ষ টাকা ঋণ নিলে তাকে প্রতিদিন ২০০ টাকা হিসেবে কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। রহিম মিয়া গদগদ হয়ে বলে প্রতিদিন দুধ বিক্রি করে আমার পকেটে কমপক্ষে ৫০০ টাকা ঢুকবে, ২০০ টাকা কিস্তি দেয়া আমার জন্য ব্যাপারই না। ঋণ কর্মকর্তা বললেন, তা ঠিক কিন্তু এই কিস্তির টাকাটা আপনাকে প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যেই অফিসে এসে জমা দিতে হবে। একথা শুনে রহিম মিয়া আঁৎকে উঠল, কীভাবে সম্ভব? প্রতিদিন ২০০ টাকা হিসেবে কিস্তি প্রদান করলে পুরো টাকা পরিশোধ হতে তার সময় লাগবে (১০০০০০÷২০০) = ৫০০ দিন আর প্রতিদিন অফিসে গিয়ে কিস্তির টাকা জমা করতে হলে তাকে প্রতিদিন যাতায়াত বাবদ কমপক্ষে ১০০ টাকা মানে ৫০০ দিনে তার খরচ হবে (৫০০×১০০) = ৫০০০০ টাকা। আর তাছাড়া প্রতিদিন কিস্তির টাকা দিতে যাওয়া মানে পুরো দিনটাই তার মাটি; গাভীর পরিচর্যা করবে কখন, আর সংসারের অন্যান্য কাজই বা করবে কখন? ভাবছে বিনা লাভে টাকা নিয়ে প্রতিদিন ২০ কি. মি. যাতায়াত করে কিস্তির টাকা প্রদান করার চেয়ে বরং সুদের উপর টাকা নিয়ে গাভী কেনাই সুবিধাজনক হবে। তা না হলে গাভী কেনার চিন্তাটাই তাকে পরিত্যাগ করতে হবে।

 জিজ্ঞাসাঃ

  1. রহিম মিয়ার বিনা লাভে ঋণ নেয়াটাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
  2. আপনি কি মনে করেন, প্রতিষ্ঠানটি বিনা লাভে ঋণ দিয়ে বেশ ভাল কাজ করেছে, তবে ঋণের কিস্তি পৌঁছে দেয়াটা মোটেও ভাল নয়। আর সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির কী দায় আছে, একবারে মোটাদাগে বিনে লাভে টাকা দিয়ে তা আবার কিস্তির মাধ্যমে নিজ খরচে আদায় করতে হবে?

 দৃশ্যকল্প-৫:

অস্বচ্ছল রহিম মিয়া নিকটস্থ কোন সমিতি/এনজিও/ব্যাংক বা অন্যকোন অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান থেকে এক লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে একটি ফ্রিজিয়ান দুধেল গাভী কিনল। গাভীটি প্রতিদিন যে পরিমাণ দুধ দেয় তা বিক্রি করে রহিম মিয়া খুব সহজেই ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারছেন। নিয়মিত কিস্তির টাকা প্রদান করলে এক বছরেই ঋণের পুরো টাকা পরিশোধ হবে। অর্থাৎ সে নিজে গাভীটির মালিক হবে এবং চেষ্টা থাকলে এবং ভাগ্য সুপ্রশন্ন হলে রহিম ঐ এক গাভী থেকে বহু গাভীর মালিক হতে পারেন।

 জিজ্ঞাসাঃ

  1. আপনি কি মনে করেন ঋণদানকারী ঋণ দিয়ে রহিমকে গাভী কেনার সুযোগ দিয়ে ভাল কাজ করেছে তবে ঋণ হিসেবে যে পরিমাণ টাকা তারা দিয়েছে সেটাই ফেরৎ নেয়া উচিৎ তার বেশী নয়? আর যদি অতিরিক্ত নেয়াটা স্বাভাবিক হয় তবে তার পরিমাণ কত এবং কিভাবে তা নির্ধারিত হবে?
  2. যদি কাউকে ঋণ দিয়ে কেবল আসল টাকাই ফেরৎ নেয়া হয় তাহলে কিস্তিতে কেন নেবে? আর কিস্তিতে পরিশোধ করার সুযোগ না থাকলে রহিম মিয়া কীভাবে এক লক্ষ টাকা ফেরৎ দেবেন? এছাড়াও কিস্তি আদায়কারীর বেতন, অফিস ম্যানেজমেন্ট ও অন্যান্য খরচ কীভাবে মেটাবেন?

 দৃশ্যকল্প-৬:

অস্বচ্ছল রহিম মিয়া ঋণ নিয়ে একটি ফ্রিজিয়ান দুধেল গাভী কেনার জন্য একটি অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানে যায়। ঋণ অফিসে গিয়ে সে জানতে পারে, ঋণের জন্য কোন সুদ বা কিস্তি দিতে হবে না। তবে গাভী কেনার পর প্রতিদিন গাভীর দুধ বিক্রি করে যে আয় হবে তার ৫০% অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানের নামে জমা করতে হবে। এক বছরে দুধ বিক্রি করে লভ্যাংশ জমা করে যদি তা গৃহীত মূলধনের থেকে অন্তত: ১০% বেশী হয় তাহলে তাকে আর গৃহীত মূলধন ফেরৎ দিতে হবে না এবং ক্রয়কৃত গাভীটিরও সে মালিক হয়ে যাবে। আর যদি জমানো লভ্যাংশ গৃহীত মূলধনের থেকে কম হয় তাহলে গৃহীত মুলধনের সাথে ১০% যোগ করে জমাকৃত লভ্যাংশের সাথে ভর্তুকি দিয়ে ঋণ সমন্বয় করতে হবে। অন্যদিকে যদি গাভীটি ঐ সময়ের মধ্যে মারা যায় তাহলে রহিম মিয়াকে (১) গৃহীত মুলধনের সাথে ১০% যোগ করে জমাকৃত লভ্যাংশের সাথে ভর্তুকি দিয়ে ঋণ সমন্বয় করতে হবে। অথবা, (২) জমাকৃত লভ্যাংশ সহ গৃহীত মূলধনের ৫০% পরিশোধ করতে হবে।

 জিজ্ঞাসাঃ

  1. রহিমের গাভী ক্রয়কে অংশীদারী কারবার হিসেবে ধরা হলে জমাকৃত লভ্যাংশ সহ গৃহীত সম্পূর্ণ টাকাই ফেরৎ দেয়ার কথা। এক্ষেত্রে জমানো লভ্যাংশ দ্বারা কিংবা সামান্য ভর্তুকি দিয়ে ১০% অতিরিক্ত সহ গৃহীত ঋণ সমন্বয় করাটাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
  2. গাভীটি মারা গেলে রহিম মিয়ার জন্য (১) ও (২) অপশনের কোনটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য বলে আপনি মনে করেন এবং কেন?
  3. আপনার মতে রহিমের গাভী কেনার জন্য আরো কোন বিকল্প পদ্ধতি আছে কি যা উপরোক্ত অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আরোপিত শর্তের থেকেও উত্তম এবং যাতে ঋণ গ্রহীতা ও ঋণ দাতা উভয়েই উপকৃত হবে?

উপরোক্ত দৃশ্যকল্পগুলো পর্যালোচনা করলে এটাই প্রতিয়মান হয় যে, সামাজিক/ পারিবারিক ক্ষেত্রে মানুষকে কখনো কখনো ঋণ গ্রহণ করতে হতেই পারে। আর ঋণের বিপরীতে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করলেই তা যেমন ‘সুদ’ হয়না, পাশাপাশি প্রদত্ত ঋণাঙ্কের থেকে বাড়তি টাকা না নিলেই তা ঋণ গ্রহণকারীর জন্য কল্যাণকর হবে এমনটাও ভাবার সুযোগ নাই। অনেকেই কোন রকম যুক্তিতর্ক ছাড়াই ব্যাংক, এনজিও ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে ঢালাওভাবে অবৈধ বা ‘সুদ’ এর কারবার বলে গুলিয়ে ফেলেন; এটিও একটি ধর্মীয় গোড়ামী। একথা ঠিক যে ব্যাংক/এনজিও গুলোর কার্যক্রমে যথেষ্ট ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে; তারপরও একটি সুন্দর সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাংক/বীমা/এনজিওর অবদান অস্বীকার্য। যদি এসকল প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম থেকে ‘সুদ’ শব্দটি পরিহার করে (সুদ এর পরিবর্তে অন্যকোন শব্দের প্রয়োগ) নীতিমালায় কিছুটা পরিবর্তন এনে ঋণ প্রদান এবং আদায় কার্যক্রমকে সহজতর করে তাহলে ব্যাংক এবং এনজিও গুলোই হতে পারে ‘সুদ’ মুক্ত সমাজ গঠনের সর্বোত্তম হাতিয়ার।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *